লিখেছেন : সায়ন্তনী নাথ (facebook link)
এটা সেই দেশের সেই বৃহদাংশ ভুক্ত মেয়েটার কাহিনী , যে “আঙুর ফল টক” গোছের প্রেম দিবসের বিরোধিতা করে … আবার সুখের সময়ে ঘটা করে “ভ্যালেন্টাইন সেলফি” সাঁটায় ভার্চুয়াল দেওয়ালে। নিজের একটার পর একটা এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অসফল হওয়ার ফাঁকে যার মাথায় জেএনইউ বা ভেমুলা বা চা বাগানের কথা থাকে না। যার কলেজে “পলিটিক্স” নেই বলে গোপন গর্ববোধে লজ্জিত বোধ করে তার বন্ধুদের প্রতিবাদী সত্ত্বার দৃঢ়তার কাছে। যার ঝুলিতে ট্রামে বাসে ট্রেনে অনেক “সম্মানরক্ষার” যুদ্ধজয়ের গল্প থাকলেও , যার বাড়িতে নিত্যদিন বেঁচে থাকার অকথ্য লড়াই সত্ত্বেও তারা আদপে ভীতু … রাষ্ট্র , রাজনীতি, ধর্মীয় নিরপেক্ষতা শব্দগুলো উচ্চারণ করতে। এই তো বেঁচেবর্তে আছি চুপচাপ, কি দরকার পাশের পাঁচ জনের জীবনে নেগেটিভ প্রভাব ফেলার?
মেয়েটা প্রতিবাদ জানায় না কিছুর। বোঝেই না কার পক্ষ নিয়ে , কার বিরুদ্ধ হয়ে কথা বলবে। কোনভাবে কথা বললে শ্যামও থাকবে কুলও থাকবে, মানে কিনা এই সংস্কারযজ্ঞের কাণ্ডারিরা আর ফেসবুক- ইন্টারনেট ছেয়ে ফেলা #standwith হাশট্যাগে সীমাবদ্ধ প্রতিবাদীরা , কোন পক্ষই গায়ে লাগাবে না। বুঝে উঠতে না পেরে সে চুপ থাকে, তাতেও শিরদাঁড়াহীন বলে চিহ্নিত হয়।
তবু এক একদিন রাত্রে এই মেয়েটিরই মনে হয় এই র্যাতডিকাল টাইম বোম্বে পরিণত হওয়া তার দেশটায় , তার ভবিতব্য কি হত, যদি সেই ছেলেটা এখনও তার জীবনে থাকত? খুব তো শখ করে একদিন ধর্ম জাত পাত মানি না বলে বড় গলা করে দুজনে জুড়েছিল। পারল টেকাতে? সেই তো কয়েক মাসের বাড়ি থেকে পালানোর ধোঁয়াশা প্ল্যান বা নিজের অসুস্থ মায়ের সাথে দাঁতে দাঁত চেপে অসহ খারাপ ব্যবহারের নাটক , কত রিহার্সাল, কত ব্লুপ্রিন্ট … টিকলো কিছু? একদিন তো শুনতেই হল “ আব্বা আম্মু কিছুতেই মানছে না। ” তবু মেয়েটার সেইদিন টার কথা মনে পড়ে। মহরম ছিল। ছেলেটা খুব মুষড়ে ছিল, বলছিল শুধু , “ আমাদের এই দেশটা ছেড়ে চলে যেতে হবে রে, থাকতে পারব না এখানে এরকম জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।’’ তখনও তো মোড়ে মোড়ে পালস পোলিওর মতন গেরুয়াকরন অভিযান শুরু হয়নি। বাচ্চা মেয়েটা ভেবেছিল নিজের বাড়িতে ডেকে নেবে ওকে, ওর পরিবারকে, ওর সমাজকে।
সব নিয়মকে তুচ্ছ করে যখন পারল না, তখন একবার শেষ চেষ্টা করল উল্টোপথে। ছেলেটার হাতে উঠেছিল গীতা, আর মেয়ে টার হাতে অনুদিত কোরান। হল না, জানেন? না হওয়ারই কথা। যুগান্তরের হাওয়ায় রচিত ইতিহাসকে অস্বীকার করা যায় না।
স্বচ্ছ ভারতের আড়ালে যখন সংখ্যালঘু অভিযানের ছক কষা হচ্ছে জয় শ্রীরাম ধ্বজাবৃত তলোয়ার-কাটারির গোপন গুদামে, তখন ভারত পাকিস্তান ম্যাচের দিন ভারতের জন্য দুজনেই সোচ্চারে গলা ফাটিয়েছিল। ম্যাচ শেষে আফ্রিদির হতাশ বিবৃতি একইভাবে মনখারাপ করেছিল দুজনের। অনলাইন গেম খেলার সময়ে কোনো পাকিস্তানি প্রতিপক্ষ থাকলে মেয়েটা খেলার শুরুতে বা শেষ সামান্য অভিবাদন জানাতে ভোলে না, অধিকাংশ দিনই courtesy টা ফেরানো হয় কিন্তু!
এটা শুনে মারতে আসবেন? মেয়েটা পাকিস্তান-সমর্থক বলবেন? বলুন। তবে এটুকু জেনে রাখবেন হিন্দুধর্মটা আপনাদের মত নিরক্ষর নিদেনপক্ষে ক্লাস ফোরের জ্ঞান পরিসীমার থেকে অনেক অনেক বড় আর নিরপেক্ষ । মেয়েটা তাই গর্বের সাথে বলে আমি হিন্দু। এবার মেয়েটা ভালো হয়ে গেল তো? দাঁড়ান।
মেয়েটা সত্যি হিন্দু বলেই সে দলিত, মুসলমান , বেশ্যা সবার সাথে খাবারের থালা ভাগ করে নিতে পারে, জলের গ্লাস শেয়ার করতে পারে। একটা বিধর্মী মানুষকে বিনা দ্বিধায় ভালবাসতে পারে।
প্রথমেই বলেছিলাম , প্রতিবাদ মেয়েটা বোঝেনা। স্বার্থপর । ভীতু। কারণ সে বুঝছে বর্তমানের প্রেক্ষিতে কি ভয়ানক পাপ সে করেছে। তাই সে চুপ, কেঁচোর মত শিরদাঁড়াহীন। প্রাণের ভয়টা তারও আছে কিনা।
লেখক পরিচিতি : সায়ন্তনী বর্তমানে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে ফাইনাল ইয়ার বি এস সি করছে। অবসর সময়ে লেখালিখি করাটা অভ্যেস। নিজস্ব ব্লগে তিনি নিয়মিত লেখালেখি করেন। নিজের সম্পর্কে তিনি বলেন 'And thus she began to dig deep into her soul... striving until she becomes one with Infinity... to unearth the Ultimate that is concealed within'।
>> উলঙ্গ হয়ে অভিনয় করলেন শাহরুখ খান
>> সিনেমা হিট করাতে রাজ কাপুর নায়িকাদের সাথে এ কি করত।
>> সানি লিওনের কিছু সাহসী ফটো
>> বিদ্যা বালানের ভয়ঙ্কর ফটোশুট
>> সেক্স চেঞ্জ করে ছেলে থেকে মেয়ে
হওয়া কি অপরাধ ? (ভিডিও)